হ্যাকিং গতিবিধি শনাক্তের পাঁচ উপায়
আধুনিক সময়ের দৈনন্দিন জীবনের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গের নাম ইন্টারনেট। ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে অফিসের কাজ তো বটেই, এখন আর্থিক লেনদেনের কাজও হচ্ছে ইন্টারনেটে। কিন্তু যুগান্তকারী এই উদ্ভাবনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার মতো মানুষেরও অভাব নেই। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার এখন ইন্টারনেটের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। এসব ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি অনলাইনে তথ্য চুরি থেকে শুরু করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কাজও করছে। হ্যাকারদের এই দৌরাত্ম্য থেকে ছাড় পাচ্ছে না প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও। অনলাইনে হ্যাকিংয়ের বিভিন্ন গতিবিধি অনেক সময়ই শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই লেখায় হ্যাকিং থেকে রক্ষা পেতে পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেছি।
আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।
ইমেইলের অফারে সাবধান
অনেক সময়ই ইমেইলের ইনবক্সে দারুণ কিছু অফার এসে হাজির হয়। এর মধ্যে অনেকগুলোতে বলা হয়ে থাকে যে আপনি বিশাল অংকের এক লটারি জিতেছেন। অনেক ইমেইলে আবার কোনো বিনিয়োগকারীর পক্ষ থেকে অফার দেওয়া হয় আপনার মাধ্যমে আপনার স্থানীয় কোনো প্রকল্পে বিনিয়োগের। আপনার একেবারে খুব কাছের কোনো মানুষের কাছ থেকে যদি এসব ইমেইল না এসে থাকে, তাহলেও নিশ্চিন্তে এসব ইমেইলকে স্প্যাম হিসেবে চিহ্নিত করে দিতে পারেন। এসব ইমেইলে মূলত ভালো ভালো অফারের কথা বলে আপনার ব্যক্তিগত এবং আর্থিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। তাই ভুলেও যদি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত কোনো তথ্য এসব ইমেইলের জবাবে পাঠিয়ে থাকেন, সেটা নিতান্তই বোকামি হবে।
ইমেইল অ্যাটাচমেন্টে সতর্ক হোন
অনেক সময় ইমেইলে প্রয়োজনীয় কোনো সফটওয়্যার কিংবা অফিসের কাজের উপযোগী কোনো ডক্যুমেন্ট অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে হাজির হতে পারে অপরিচিত ঠিকানা থেকে। বিনামূল্যের এসব প্রয়োজনীয় রিসোর্সের কথা বলে মূলত বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয় ইমেইল ব্যবহারকারীর মাঝে। আদতে এসব অ্যাটাচমেন্টের সাথে থাকে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার যেগুলো আপনার পিসির তথ্য হাতিয়ে নেওয়া থেকে শুরু করে পিসিকে অচল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই অপরিচিত কারও কাছ থেকে অ্যাটাচমেন্টসহ ইমেইল আসলে তা ভালো করে দেখে নিন। ইমেইল প্রেরণকারীর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তবেই এসব অ্যাটাচমেন্ট ডাউনলোড করুন।
সব ওয়েবসাইট নির্ভরযোগ্য নয়
বিভিন্ন কাজের জন্য আমাদের প্রচুর পরিমাণে ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হয়। এসব ওয়েবসাইটের অনেকগুলোতেই রেজিস্ট্রেশন বা লগ-ইন করতে হয়। এর সবগুলোই কিন্তু নির্ভরযোগ্য নয়। ফেক ওয়েবসাইটের সংখ্যা নেহায়েত কম নেই, যেগুলোর মূল কাজ হলো রেজিস্ট্রেশন বা লগ-ইনের নাম করে আপনার তথ্য হাতিয়ে নেওয়া। অনেক সময় ব্যাংকের ওয়েবসাইটগুলোর ফেক কপিও করা হয়ে থাকে। এসব ওয়েবসাইটের ডিজাইন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইটের হুবহু কপি করা হয়। ওয়েব ঠিকানাও এমনভাবে বাছাই করা হয় যাতে হয়তো একটা অক্ষরে একটু ভিন্নতা থাকে এবং সাধারণভাবে এই পরিবর্তন চোখ এড়িয়ে যায়। তাই ওয়েব ঠিকানা ভালো করে যাচাই করে নিন। আর ওয়েব ঠিকানায় ‘এইচটিটিপিএস: (https:)’ রয়েছে কি না, তা দেখে নিন। বেশিরভাগ বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটেই সুরক্ষার জন্য ‘এইচটিটিপিএস:’ সার্টিফিকেট থাকে। তাই ‘এইচটিটিপিএস:’ না থাকলে সেই ওয়েবসাইটকে সন্দেহজনক তালিকায় ফেলে দিন।
বিশ্বস্ত মোবাইল অ্যাপসে ভরসা রাখুন
স্মার্টফোন আর ট্যাবলেট পিসির এই যুগে এসে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেই সব কাজ করার ধারা তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ নিতে প্রস্তুত হ্যাকাররাও। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার আর স্পাইওয়্যার ছড়ানোর কাজে তারা সফলও বটে। এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অ্যাপস না হলে ইন্সটল করবেন না। গুগল প্লেস্টোরের বেশিরভাগ অ্যাপসই ভেরিফায়েড। এর বাইরে থার্ড-পার্টি অ্যাপস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অ্যাপসের নির্মাতার নাম-ঠিকানা জেনে নিন এবং জানার চেষ্টা করুন তারা কতটা বিশ্বস্ত। অ্যাপসের রিভিউও পড়ে নিতে পারেন। আর অ্যাপস ইন্সটল করার ক্ষেত্রে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা অফিশিয়াল ওয়েবস্টোরেই নির্ভর করুন।
বিজ্ঞাপনের চাকচিক্য
অনেক সময়ই অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপনে চমকিত করার মতো সব অফার পাওয়া যায়। অনেক সময় কোনো পণ্যের দাম উল্লেখ করা হয় এর প্রকৃত দামের ৮০ বা ৯০ ভাগ কম। অবিশ্বাস্য রকমের ফ্রি উপহারের অফারও থাকে। এসব অফার থেকে সতর্ক থাকুন। এগুলোর বেশিরভাগই স্ক্যাম বা ফিশিং কার্যক্রমের অংশ। এসবের মূল লক্ষ্য হলো আপনার আর্থিক তথ্য হাতিয়ে নেওয়া। তাছাড়া অনেক সময় চোরাই পণ্য কেনাবেচার জন্যও এমন কৌশল অবলম্বন করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে চোরাই পণ্য কিনলে ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে আপনার।
হ্যাকিং বিষয়ে আরো সুন্দর সুন্দর পোষ্ট আপনাদের কাছে শেয়ার করবো সাথেই থাকবেন।কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ,
SOCIALIZE IT →